Female Professor Married to Student: পশ্চিমবঙ্গের একটি রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষে এক প্রবীণ অধ্যাপিকার সঙ্গে এক ছাত্রের ‘বিবাহ’ অনুষ্ঠানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
কি ঘটেছে ঠিক?
নদিয়া জেলার হরিণঘাটায় অবস্থিত মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির (MAKAUT) মনোবিজ্ঞান বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক অধ্যাপিকা নববধূর বেশে সজ্জিত হয়ে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে বাঙালি হিন্দু বিবাহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রীতি, যেমন ‘সিঁদুরদান’ ও ‘মালা বদল’, শ্রেণিকক্ষেই পালন করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ ও তদন্ত কমিটি
ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নানান মহলে সমালোচনা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং ওই অধ্যাপিকার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তপস চক্রবর্তী জানান,
“অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, এটি একটি পাঠ্যক্রমভুক্ত সাইকো-ড্রামার অংশ ছিল এবং একাডেমিক উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। এটি কোনো বাস্তব ঘটনা নয় এবং ভিডিওটি বাইরের প্রচারের জন্য নয়।”

Female Professor Married to Student
অধ্যাপিকার প্রতিক্রিয়া
অধ্যাপিকা দাবি করেছেন, এই ভিডিও শুধুমাত্র বিভাগের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু সেটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁস করা হয়েছে এবং তাঁর বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করা হয়েছে।
তবে, সমালোচনার মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছুটিতে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট ছাত্রকেও আপাতত ক্লাসে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিনজন মহিলা অধ্যাপিকার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা এই ঘটনাটি খতিয়ে দেখবেন এবং রিপোর্ট পেশ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,
“এই ঘটনার ফলে যেহেতু সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, তাই অধ্যাপিকাকে আপাতত ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

Female Professor Married to Student
সমাজের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ করণীয়
এই ঘটনায় সমাজের একাংশ উদ্বিগ্ন, কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ‘নাটকীয়’ কর্মকাণ্ড কতটা উপযুক্ত তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি শিক্ষার অংশ হলেও, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ভুল ব্যাখ্যার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, অনেকেই মনে করছেন, বিষয়টি যথাযথভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই নিষ্পত্তি করা উচিত ছিল।
এখন সকলের নজর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টের দিকে। যদি সত্যিই এটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম হয়ে থাকে, তবে অধ্যাপিকার সম্মান রক্ষা করা উচিত। অন্যদিকে, যদি কোনও অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটে থাকে, তবে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উপসংহার
এই ঘটনার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যক্রমভুক্ত সৃজনশীল শিক্ষা ও সামাজিক দায়িত্ববোধের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি সামনে এসেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে বিতর্কের জন্ম না দেয়, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও সতর্ক হতে হবে।

Female Professor Married to Student