Pahalgam Attack :জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সৌদি আরবের সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি দিল্লি ফিরে জরুরি বৈঠক করেছেন। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটক।
পাহলগাম সন্ত্রাসী হামলা: সংক্ষিপ্ত তথ্য
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
ঘটনার স্থান | পাহলগাম, জম্মু ও কাশ্মীর (বাইসারান মিডো) |
তারিখ ও সময় | ২৩ এপ্রিল ২০২৫, দুপুর ২:৩০ টা |
নিহতের সংখ্যা | ২৬ জন (অধিকাংশ পর্যটক) |
দায়িত্ব স্বীকারকারী | দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF), লস্কর-ই-তৈবার অঙ্গসংগঠন |
সন্ত্রাসীদের সংখ্যা | ৫-৬ জন (বিদেশি সন্ত্রাসীসহ) |
মাস্টারমাইন্ড | সাইফুল্লাহ কাসুরি (লস্কর-ই-তৈবার ডেপুটি চিফ) |
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া | “হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না, বিচার হবে” |
কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা | অমিত শাহ শ্রীনগারে, জরুরি CCS বৈঠক |
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নিন্দা |

সন্ত্রাসী হামলার বিস্তারিত
মঙ্গলবার দুপুরে পাহলগামের বিখ্যাত পর্যটন স্পট ‘বাইসারান মিডো’-তে একদল সন্ত্রাসী পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এই এলাকাটি ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত এবং পাহলগাম থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হামলার দায়িত্ব নিয়েছে পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার অঙ্গসংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ৫-৬ জন সন্ত্রাসী এই হামলায় জড়িত ছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশি সন্ত্রাসী (পাকিস্তানি) ছিল। তারা হামলার আগে এলাকা রেকি করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে লস্কর-ই-তৈবার ডেপুটি চিফ সাইফুল্লাহ কাসুরিকে সন্দেহ করা হচ্ছে, যিনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
প্রধানমন্ত্রী মোদির কড়া প্রতিক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী মোদি এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ পোস্ট করে বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে আমি কঠোর ভাষায় নিন্দা করছি। যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। আমি আহতদের দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই নৃশংস হামলার পেছনে যারা জড়িত, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে… তাদের ছাড় দেওয়া হবে না! তাদের অপতৎপরতা কখনই সফল হবে না। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংকল্প অটল এবং এটি আরও শক্তিশালী হবে।”
সৌদি আরবের সফর সংক্ষিপ্ত করে দিল্লি ফিরলেন মোদি
প্রধানমন্ত্রী মোদি সৌদি আরবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে পাহলগাম হামলা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি মূলত বুধবার রাতে ভারতে ফিরার কথা থাকলেও হামলার পরিস্থিতি বিবেচনায় সফর ছোট করে দিল্লি ফিরে আসেন।
দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেই তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। বুধবার সকালে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটির (CCS) একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

অমিত শাহ শ্রীনগারে, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ব্যস্ত
কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ শ্রীনগারে পৌঁছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত ও অন্যান্য আধিকারিকদের কাছ থেকে হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফিং নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে জম্মু-কাশ্মীর সফরের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক সমর্থন ও নিন্দা
এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবেনিস এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতারা। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থানের প্রতি তারা সমর্থন জানিয়েছেন।
উপসংহার
পাহলগামের এই হামলা কাশ্মীরে শান্তি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ করছে। তবে, ভারত সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির স্পষ্ট বার্তা—“সন্ত্রাসীদের কোনও রেহাই দেওয়া হবে না!”