Do Patti Movie Review : মুক্তি তারিখ: ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
ভাষা: হিন্দি
সময়: ২ ঘণ্টা ৬ মিনিট
ধরণ: থ্রিলার, ড্রামা, মিস্ট্রি
অভিনয়ে: কৃতি স্যানন, শাহীর শেখ, কাজল, তনভী আজমি
পরিচালনা: শশাঙ্ক চতুর্বেদী
সংগীত: সচেত-পরম্পরা
গল্পের ভিতরে নারীজীবনের চড়াই-উতরাই
“দো পাত্তি”(Do Patti) সিনেমাটি নারীদের জীবন, তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও মানসিক টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত। গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কানিকা ধিল্লন। নারীদের জটিল আবেগ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন এখানে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তাতে গল্পটি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরিক নির্যাতনের ওপর নির্ভর এই গল্পটি কঠিন ও কষ্টদায়ক, তবে সত্য এবং আবেগে পূর্ণ।
Do Patti Movie Review
কাহিনির মোচড়: সম্পর্কের দ্বন্দ্ব ও অপরাধের ছোঁয়া
দো পাত্তি (Do Patti) ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন দুই যমজ বোন সৌম্যা ও শৈলী। শৈলী মনের দিক থেকে বেশ শক্তিশালী, যেখানে সৌম্যা একটু দুর্বল। যখন শৈলী পরিবারের থেকে দূরে পাঠানো হয়, সৌম্যার জীবনে ঢুকে পড়ে ধ্রুব নামে এক যুবক। এদিকে শৈলী ফেরত এলে তাদের সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সৌম্যার প্রেমিক বরুণের সঙ্গে শৈলীর সম্পর্ক গভীর হতে থাকে, যা একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে। বরুণের চরিত্রটি মেজাজি এবং কখনো কখনো সহিংস হয়ে ওঠে, যা তাদের জীবনে গভীর ছাপ ফেলে।
নারী দৃষ্টিভঙ্গির শক্তি: জটিল বিষয়গুলোতে দৃষ্টিপাত
ছবিটি (Do Patti) পিটিএসডি, শৈশবের ট্রমা, এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেছে। কানিকা দেখিয়েছেন, কীভাবে মানসিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে। এ বিষয়গুলো আমাদের চারপাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সমাজে প্রায়শই অবহেলিত। সৌম্যার জীবন এখানে একটি প্রতীকী রূপ নিয়ে আসে, যেখানে তার নীরবতা, ভয় এবং মানসিক অবস্থার প্রভাব আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
অভিনয় এবং পরিচালনা: জীবন্ত অভিনয়শিল্পীদের উপস্থিতি
কাজলের পুলিশ অফিসার “বিদ্যা জ্যোতি” চরিত্রে তার তীক্ষ্ণতাকে পুরোপুরি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে চরিত্রটি আরও ভালভাবে গড়ে তোলা যেত। কৃতি স্যানন এখানে যমজ দুই বোনের ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। বিশেষ করে সৌম্যার চরিত্রে কৃতির অভিনয় খুবই মর্মস্পর্শী। শাহীর শেখ তার চরিত্রে ঝুঁকি নিয়েছেন এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করেছেন। তনভী আজমি মায়ের চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন, যা চরিত্রগুলির মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করেছে।
Do Patti Movie Review
সিনেমার ইতিবাচক দিক এবং দুর্বলতা
ছবিটির ধীরলয়ে বর্ণনার ধরন এবং সংবেদনশীল উপস্থাপন মন ছুঁয়ে যায়। তবে ক্লাইম্যাক্সের একটি দুর্বলতা রয়েছে, যা গল্পের ধারাবাহিকতায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটায়। শেষের দিকে কিছু বিষয় আরও সাবলীলভাবে মেলে ধরলে সিনেমাটি একটি উচ্চতর স্তরে পৌঁছাতে পারত। তবু “দো পাত্তি” (Do Patti) সিনেমাটি আমাদের মনে জায়গা করে নেয় এর বিশুদ্ধ আবেগ এবং নারীদের জটিল জীবনচিত্র তুলে ধরার জন্য।
উপসংহার: গল্প বলার নতুন ছন্দে নারীর দৃষ্টিকোণ
“দো পাত্তি” (Do Patti) কেবল একটি সিনেমা নয়; এটি নারীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নারী জীবনের কঠিন দিকগুলো তুলে ধরেছে। নারীদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা এবং সেই অবস্থার সুযোগ নেওয়া অপরাধীদের কৌশলগুলো নিয়ে কানিকার লেখা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। শশাঙ্ক চতুর্বেদীর পরিচালনা এবং কৃতি স্যাননের প্রযোজনায়, “দো পাত্তি” সমাজের অনেক অবহেলিত বিষয়গুলো নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা করে।
Do Patti Movie Review