History of Kumbh Prayag :কুম্ভ প্রয়াগের ইতিহাস জেনে নিন।


History of Kumbh Prayag :কুম্ভ প্রয়াগ ভারতের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান, যেখানে চারটি নদী একত্রে মিলিত হয়েছে। এটি হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বিশেষত কুম্ভ মেলার জন্য প্রসিদ্ধ। যুগ যুগ ধরে, ঋষি-মুনিরা এখানে তপস্যা করেছেন এবং ভক্তরা মোক্ষ লাভের আশায় স্নান করেছেন। আজ আমরা কুম্ভ প্রয়াগের ইতিহাস, এর ধর্মীয় গুরুত্ব এবং ঐতিহ্যের কথা জানবো।

কুম্ভ প্রয়াগ: নামকরণের ইতিহাস

“কুম্ভ” শব্দটি সংস্কৃত থেকে এসেছে, যার অর্থ “কলস” বা “পাত্র” এবং “প্রয়াগ” অর্থ “সংযোগস্থল”। পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় অমৃতের কুম্ভ থেকে কয়েক ফোঁটা অমৃত গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী ও অলকানন্দার মিলনস্থলে পড়েছিল। সেই কারণেই এই স্থানকে কুম্ভ প্রয়াগ বলা হয় এবং এটি অমরত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।

পুরাণে কুম্ভ প্রয়াগ

হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দেবতা ও অসুরদের মধ্যে সমুদ্র মন্থনের সময় অমৃত কুম্ভের জন্য সংঘর্ষ হয়। সেই সময়, দেবরাজ ইন্দ্রের নির্দেশে বিষ্ণুর বাহক গরুড় চারটি স্থানে অমৃতের কণা ফেলেন—প্রয়াগরাজ (উত্তরপ্রদেশ), নাসিক (মহারাষ্ট্র), উজ্জয়িনী (মধ্যপ্রদেশ), এবং হরিদ্বার (উত্তরাখণ্ড)। এই চারটি স্থানেই কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়, যা বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে একটি।

History of Kumbh Prayag

History of Kumbh Prayag

Read More :

KBC 16 with Samay Raina :অমিতাভ বচ্চনের কাছে ‘প্রোপার্টি মে হিস্সা’ চাইলেন, সময় রায়না! ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-তে, সে এক মজার কাণ্ড।

কুম্ভ প্রয়াগের ভৌগোলিক অবস্থান

কুম্ভ প্রয়াগ উত্তরাখণ্ডের অন্যতম প্রধান নদীসংযোগস্থল, যেখানে অলকানন্দা ও সরস্বতী নদীর মিলন ঘটে। এটি ভারতের অন্যতম পাঁচটি প্রয়াগের মধ্যে একটি এবং হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কুম্ভ মেলার ঐতিহ্য

প্রতি ১২ বছর অন্তর এখানে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এখানে এসে স্নান করেন, যা তাদের পাপ মোচন ও মোক্ষ লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। কুম্ভ মেলায় সাধু, আচার্য, ধর্মগুরু এবং ভক্তদের এক মহামিলন ঘটে, যা ভারতের আধ্যাত্মিক সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অংশ।

পৌরাণিক কাহিনি

মহাকুম্ভ মেলার উৎপত্তি হয় সমুদ্র মন্থনের (Samudra Manthan) ঘটনা থেকে। দেবতা ও অসুররা যখন অমৃতের কলস (কুম্ভ) লাভের জন্য যুদ্ধ করছিল, তখন বিষ্ণু দেব গরুড়ের পিঠে উঠে সেই অমৃতের কলস নিয়ে পালিয়ে যান। এই সময় তিনি চারটি স্থানে (হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ, উজ্জয়িনী ও নাসিক) অমৃতের কণিকা ফেলে দেন। তাই এই স্থানগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর পর মহাকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্বাস করা হয় যে, এখানে গঙ্গাস্নান করলে সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়।

কুম্ভ প্রয়াগের বর্তমান গুরুত্ব

আজও, কুম্ভ প্রয়াগ কেবলমাত্র ধর্মীয় কারণে নয়, পর্যটনের জন্যও জনপ্রিয়। এটি উত্তরাখণ্ডের অন্যতম দর্শনীয় স্থান, যেখানে প্রকৃতির অপরূপ শোভা ও ধর্মীয় অনুভূতি একসঙ্গে মিশে যায়।

History of Kumbh Prayag

History of Kumbh Prayag

উপসংহার

কুম্ভ প্রয়াগ শুধু একটি নদীসংযোগস্থল নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক শক্তির কেন্দ্র। যুগ যুগ ধরে এটি হিন্দুদের জন্য মোক্ষ ও পূর্ণতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ইতিহাস, পুরাণ ও ঐতিহ্যের মিশেলে কুম্ভ প্রয়াগ ভারতের ধর্মীয় সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আপনি যদি আধ্যাত্মিকতা ও ইতিহাস ভালোবাসেন, তবে একবার হলেও কুম্ভ প্রয়াগ দর্শন করা উচিত। এটি শুধু একটি স্থান নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা!

Leave a comment