Steve Smith Retirement :২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হারের পর অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ ওডিআই ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ৩৫ বছর বয়সী এই তারকা খেলোয়াড় তার দীর্ঘ ওডিআই ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন, তবে টেস্ট ও টি২০আই ফরম্যাটে তিনি খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
স্টিভ স্মিথের ক্যারিয়ার (Steve Smith Retirement)সারসংক্ষেপ
বিষয় | ওডিআই | টেস্ট |
---|---|---|
ম্যাচ | ১৭০ | ১০৫+ |
রান | ৫,৮০০ | ১০,২০০+ |
গড় | ৪৩.২৮ | ৬০.৮৯ |
সেঞ্চুরি | ১২ | ৩২ |
হাফ-সেঞ্চুরি | ৩৫ | ৪০ |
সর্বোচ্চ স্কোর | ১৬৪ (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০১৬) | ২৩৯ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০১৭) |
উইকেট | ২৮ | ১৯ |
বিশ্বকাপ জয় | ২০১৫, ২০২৩ | – |
অধিনায়কত্ব | ৬৪ ম্যাচ (৩২ জয়, ২৮ হার) | – |
ভবিষ্যত পরিকল্পনা | অবসর নেওয়া | টেস্ট ও টি২০আই চালিয়ে যাবেন |
সংক্ষিপ্ত তথ্য:
- স্টিভ স্মিথ ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হারের পর ওডিআই থেকে অবসর নিয়েছেন।
- তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি বিশ্বকাপ জয় করেছেন (২০১৫ ও ২০২৩)।
- টেস্ট ক্রিকেটে তিনি এখনও সক্রিয় এবং ২০২৬ অ্যাশেজ ও ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের জন্য প্রস্তুত।
- তার লক্ষ্য হলো টেস্ট ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়া এবং অস্ট্রেলিয়াকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাওয়া।
স্টিভ স্মিথের অবসর একটি যুগের সমাপ্তি, তবে টেস্ট ক্রিকেটে তার অবদান এখনও চলমান।

Steve Smith Retirement
এক যুগের অবিস্মরণীয় যাত্রা
স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৭০টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন, যেখানে তিনি ৫,৮০০ রান সংগ্রহ করেছেন। তার ব্যাটিং গড় ৪৩.২৮ এবং স্ট্রাইক রেট ৮৬.৯৬। তিনি ১২টি সেঞ্চুরি ও ৩৫টি হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৪ রান করে তিনি তার সর্বোচ্চ স্কোর রেকর্ড করেন। শুধু ব্যাটিং নয়, লেগস্পিনার হিসেবে তিনি ২৮টি উইকেটও নিয়েছেন।
বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি
স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী। ২০১৫ সালে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বে এবং ২০২৩ সালে প্যাট কামিন্সের অধিনায়কত্বে তিনি বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন। বিশ্বকাপ জয়কে তিনি তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অধিনায়কত্বের দায়িত্ব
স্টিভ স্মিথ ২০১৫ সালে মাইকেল ক্লার্কের অবসরের পর অস্ট্রেলিয়ার ওডিআই অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালের বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর তিনি সাময়িকভাবে অধিনায়কত্ব হারালেও পরে আবার দায়িত্ব ফিরে পান। তিনি মোট ৬৪টি ওডিআই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার মধ্যে ৩২টিতে জয় ও ২৮টিতে পরাজয় হয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫: শেষ অধ্যায়
২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্যাট কামিন্সের ইনজুরির কারণে তিনি এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছালেও রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয়। সেমিফাইনালে স্মিথ ৭৩ রান করে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন, কিন্তু তা দলকে জয় এনে দিতে পারেনি। ম্যাচ শেষে তিনি তার সতীর্থদের জানান, এটি তার শেষ ওডিআই ম্যাচ।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
স্টিভ স্মিথ ওডিআই থেকে অবসর নিলেও টেস্ট ও টি২০আই ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেছেন, “টেস্ট ক্রিকেট আমার জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের জন্য উন্মুখ। আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেটে আমার এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে।”
অস্ট্রেলিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ
স্টিভ স্মিথের অবসরের পর অস্ট্রেলিয়ান দলকে এখন নতুন নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞতা গড়ে তুলতে হবে। ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর স্মিথের বিদায় দলকে আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড স্মিথের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে এবং তার অবদানের প্রশংসা করেছে।

Steve Smith Retirement
স্টিভ স্মিথের উত্তরাধিকার
স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন। তার অবসর শুধু অস্ট্রেলিয়ার জন্যই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও একটি বড় ক্ষতি। তবে তার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার এবং অসাধারণ সাফল্য তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
স্টিভ স্মিথের এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেট বিশ্বকে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই পরিবর্তন আসে। এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষা, টেস্ট ক্রিকেটে স্মিথের আরও কিছু অবিস্মরণীয় ইনিংসের জন্য।
স্টিভ স্মিথের ওডিআই ক্যারিয়ার: কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান
- ম্যাচ: ১৭০
- রান: ৫,৮০০
- গড়: ৪৩.২৮
- সেঞ্চুরি: ১২
- হাফ-সেঞ্চুরি: ৩৫
- সর্বোচ্চ স্কোর: ১৬৪
- উইকেট: ২৮
- ক্যাচ: ৯০
স্টিভ স্মিথের এই অবিস্মরণীয় যাত্রা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে চিরকাল থাকবে। তার অবসরের মাধ্যমে একটি যুগের সমাপ্তি হলেও, তার রেখে যাওয়া স্মৃতি ও সাফল্য তাকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখবে।