Yashasvi Jaiswal Out Controversy :মেলবোর্নে চতুর্থ টেস্টের পঞ্চম দিনে যশস্বী জয়সওয়ালের আউট নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ৮৪ রানে ব্যাটিং করার সময় প্যাট কামিন্সের শর্টপিচ ডেলিভারি লেগ সাইডে তাড়া করতে গিয়ে হুক শট মিস করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। অস্ট্রেলিয়া ক্যাচ আউটের আবেদন জানালেও অনফিল্ড আম্পায়ার জোয়েল উইলসন ‘না আউট’ দেন।
তবে অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নিলে তৃতীয় আম্পায়ার সেই সিদ্ধান্ত উল্টে দিয়ে যশস্বীকে আউট ঘোষণা করেন, যদিও স্নিকোমিটারে বল ব্যাট স্পর্শ করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিদ্ধান্ত নিয়ে যশস্বী আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বললেও শেষ পর্যন্ত ডাগআউটে ফিরতে হয় তাকে।
তৃতীয় আম্পায়ার বল ব্যাটের কাছাকাছি দিয়ে যাওয়ার সময় সামান্য ডিফ্লেকশন দেখেন। যদিও স্নিকোমিটার কোনো স্পাইক দেখায়নি। সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করতে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনের অ্যাপেন্ডিক্স ডি-এর ৩.৩.৬ ধারা উল্লেখ করা হয়, যেখানে বলা আছে— “প্রযুক্তি ব্যবহার করেও যদি তৃতীয় আম্পায়ার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে আত্মবিশ্বাসী না হন, তবে অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।”

Yashasvi Jaiswal Out Controversy
তৃতীয় আম্পায়ার নিশ্চিত ছিলেন যে ডিফ্লেকশন ছিল, যদিও তা স্নিকোমিটারে স্পষ্ট হয়নি। এ বিষয়ে ওয়ারেন ব্রেনান, স্নিকো পরিচালনাকারী সংস্থার মালিক, বলেন, “শুধু হটস্পটই নিশ্চিত সিদ্ধান্ত দিতে পারত, কিন্তু এই সিরিজে হটস্পট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না।”
প্রাক্তন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সিমন টফেল চ্যানেল সেভেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার মতে, সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। বল ব্যাটের স্পর্শে ডিফ্লেকশন ছিল স্পষ্ট। স্নিকোমিটার এ ক্ষেত্রে কার্যকর না হলেও তৃতীয় আম্পায়ার যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
যদিও বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়, যশস্বী তার ইনিংসে দেখিয়েছেন অসাধারণ মানসিক দৃঢ়তা। প্রথম ইনিংসে তিনটি ক্যাচ মিস করে অস্ট্রেলিয়াকে সুবিধা দিয়েছিলেন। বিশেষত, মার্নাস লাবুশেনকে ৪৬ রানে জীবন দিলে অস্ট্রেলিয়া আরও ২৩৪ রান যোগ করে দ্বিতীয় ইনিংসে লিড বাড়ায়। কিন্তু যশস্বীর ২০৮ বলে ৮৪ রানের ইনিংস অস্ট্রেলিয়ানদের প্রশংসা আদায় করে নেয়।
৭১তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলটি ছিল শর্টপিচড এবং লেগ সাইডে। যশস্বী জয়সওয়াল সেই বলটি পুল করার চেষ্টা করেন, তবে ব্যাটের সঙ্গে বলের কোনো সংযোগ ঘটেনি। বলটি মিস করলে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা ক্যাচ আউটের জন্য জোরালো আবেদন করেন। কিন্তু অনফিল্ড আম্পায়ার তা নাকচ করে দেন এবং বলটি ‘না আউট’ বলে ঘোষণা করেন।
এরপর প্যাট কামিন্স রিভিউ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রিপ্লেতে দেখা যায়, স্নিকোমিটারে বল ব্যাট স্পর্শ করার কোনো স্পাইক ছিল না। তবে তৃতীয় আম্পায়ার বলের ডিফ্লেকশন দেখে যশস্বীকে আউট ঘোষণা করেন। এই সিদ্ধান্ত যশস্বীর জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক ছিল।

Yashasvi Jaiswal Out Controversy
আউট হওয়ার পর যশস্বীকে অনফিল্ড আম্পায়ারের সঙ্গে কিছু কথা বলতে দেখা যায়। তবে নিয়ম মেনে তিনি মাঠ ছাড়েন এবং ডাগআউটে ফিরে যান। যশস্বীর মুখে তখন অসন্তোষ এবং হতাশার ছাপ স্পষ্ট ছিল।
এই ম্যাচে স্নিকোমিটার প্রযুক্তি নিয়ে আরও একবার বিতর্ক দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে আকাশ দীপের আউটেও স্নিকোমিটার কোনো স্পাইক দেখাতে ব্যর্থ হয়। তবে তৃতীয় আম্পায়ার বল ব্যাটের ডিফ্লেকশন দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে প্রযুক্তির কার্যকারিতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেট ভক্তরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এমন বিতর্ক এড়াতে আরও নির্ভুল প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে।
যশস্বী জয়সওয়ালের ইনিংস শুধুমাত্র তার ক্রিকেটীয় দক্ষতার পরিচয় দেয়নি, বরং চাপের মধ্যে তার মানসিক দৃঢ়তারও প্রতিফলন ঘটিয়েছে। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের নাটকীয়তারই একটি অংশ, তবে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।